ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ | ২ মাঘ ১৪৩১

বিদায়ী ভাষণে যা বললেন বাইডেন

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:২২ পিএম | আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:২৭ পিএম

জাতির উদ্দেশে বিদায়ী ভাষণ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বুধবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিস থেকে দেওয়া ভাষণে তিনি তার মেয়াদে প্রশাসনের অর্জন তুলে ধরেন। তিনি চাকরির সুযোগ সৃষ্টি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা, মহামারি থেকে দেশকে পুনরুদ্ধার এবং আমেরিকাকে আরও নিরাপদ করার কথা উল্লেখ করেন।

 

বিদায়ী ভাষণে বাইডেন বলেন, আমরা যা করেছি তার পূর্ণ প্রভাব অনুভব করতে সময় লাগবে। তবে বীজ রোপিত হয়েছে, যা আগামী দশকগুলোতে বেড়ে উঠবে এবং ফল দেবে।

 

রিপাবলিকান পার্টির নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন। আর মেয়াদ শেষে বিদায় নেবেন ডেমোক্রেটিক পার্টির বাইডেন। ট্রাম্পের দায়িত্ব নেওয়ার দিন কয়েক আগে বাইডেন তার বিদায়ী ভাষণ দিলেন।

 

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বাইডেন বলেন, শক্তিশালী স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী তাদের অপ্রতিহত প্রভাব ব্যবহার করে আমাদের জলবায়ু সংকট মোকাবিলার পদক্ষেপ ধ্বংস করতে চায়, নিজেদের ক্ষমতা এবং মুনাফার স্বার্থে।

 

তিনি সামাজিক মাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর সমালোচনা করেন, বিশেষ করে মেটা, যা স্বাধীন তথ্য যাচাইকারীদের কার্যক্রম বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। বাইডেন বলেন, "সামাজিক মাধ্যম সত্যের উপর মিথ্যা চাপিয়ে দিচ্ছে, ক্ষমতা ও মুনাফার জন্য।"

 

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় (এআই) বিপুল সম্ভাবনা দেখলেও এর বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করেন বাইডেন। তিনি বলেন, এআই বিপুল সম্ভাবনা উপহার দিতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে প্রহরা না থাকলে তা নতুন হুমকির জন্ম দিতে পারে। তবে রূপান্তরমূলক প্রযুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই চীনের ওপর নেতৃত্ব নিতে হবে বলে উল্লেখ করেন বাইডেন।

 

প্রাইমটাইমে দেওয়া ভাষণে ৮২ বছর বয়সী বাইডেন বলেন, আজ আমেরিকায় চরম সম্পদ, ক্ষমতা ও প্রভাবের একটি অলিগার্কি বিকশিত হচ্ছে, যা আক্ষরিক অর্থে যুক্তরাষ্ট্রের সমগ্র গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এটি খুব অল্পসংখ্যক অতিধনী লোকের হাতে ক্ষমতার বিপজ্জনক কেন্দ্রীকরণ।

 

বাইডেন সিলিকন ভ্যালির ধনী ব্যক্তিদের প্রতি ইঙ্গিত করেন, যাদের মধ্যে ইলন মাস্ক উল্লেখযোগ্য। মাস্ক ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ এবং তার প্রচারণায় বিশাল আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। অন্যান্য প্রযুক্তি ব্যক্তিত্ব যেমন জেফ বেজোস এবং মার্ক জাকারবার্গ ট্রাম্পের সাথে সম্পর্ক উন্নত করার চেষ্টা করছেন।

 

বক্তৃতার শেষে বাইডেন আমেরিকানদের আহ্বান জানান, "আপনারা দেশের রক্ষাকবচ হোন। আগুনের শিখা প্রজ্জ্বলিত রাখুন।"

 

বাইডেনের বিদায়ী ভাষণটি আসে একই দিনে, যেদিন তিনি ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির ঘোষণা দেন। এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হবে ১৯ জানুয়ারি, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতায় আসার একদিন আগে।

 

তিনি জানান, এই আলোচনা তার কূটনৈতিক জীবনের সবচেয়ে কঠিন একটি চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে ট্রাম্পও এই চুক্তির কৃতিত্ব দাবি করেছেন, উল্লেখ করে বলেছেন, "আমার নির্বাচনী জয়ই এই চুক্তিকে সম্ভব করেছে।"

 

২০২০ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন বাইডেন। ২০২৪ সালের নির্বাচনেও বাইডেন লড়তে চেয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। তার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে ট্রাম্পের কাছে পরাজিত হন।

 

বাইডেনের বিদায়ী ভাষণ ছিল ওভাল অফিস থেকে তার পঞ্চম এবং শেষ আনুষ্ঠানিক ভাষণ। বাইডেন সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে বক্তব্য রাখেন, যেখানে তিনি তার পররাষ্ট্রনীতির রেকর্ড-এর প্রশংসা করেন। সূত্র- বিবিসি


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্থায়ী শান্তির আশা তুরস্কের: এরদোগান
৩০ যুদ্ধবন্দির বিনিময়ে ২৪৬৬ সেনা ফেরত পেল রাশিয়া
চীনের আধিপত্য রুখতে ট্রাম্পের পদক্ষেপ
রোববার কার্যকর হবে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি, জানালেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী
এবার ৩০ যুদ্ধবন্দির বিনিময়ে ২৪৬৬ সেনা ফেরত পেল রাশিয়া
আরও

আরও পড়ুন

কুষ্টিয়ায় চালের বাজার মনিটরিংয়ে ডিসি

কুষ্টিয়ায় চালের বাজার মনিটরিংয়ে ডিসি

১৯ জানুয়ারি ইসলামী আইনজীবী পরিষদের কেন্দ্রীয় সম্মেলন সফলের আহ্বান

১৯ জানুয়ারি ইসলামী আইনজীবী পরিষদের কেন্দ্রীয় সম্মেলন সফলের আহ্বান

ঘোষণাপত্রকে কেন্দ্র করে যেন ফাটল সৃষ্টি না হয় : সালাহউদ্দিন

ঘোষণাপত্রকে কেন্দ্র করে যেন ফাটল সৃষ্টি না হয় : সালাহউদ্দিন

জুলাই-আগস্ট নৃশংসতা: জাতিসংঘে পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাঠিয়েছে সরকার

জুলাই-আগস্ট নৃশংসতা: জাতিসংঘে পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাঠিয়েছে সরকার

ইসলামি আদর্শের প্রতি বিদ্বেষ রেখে কোন দল ক্ষমতার চিন্তা করতে পারবে না: এএমএম বাহাউদ্দীন

ইসলামি আদর্শের প্রতি বিদ্বেষ রেখে কোন দল ক্ষমতার চিন্তা করতে পারবে না: এএমএম বাহাউদ্দীন

দুদকের মহাপরিচালক ও পরিচালক পদে পদোন্নতি

দুদকের মহাপরিচালক ও পরিচালক পদে পদোন্নতি

বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে সৈয়দপুরে রেস্তোরাঁ মালিকদের মানববন্ধন

বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে সৈয়দপুরে রেস্তোরাঁ মালিকদের মানববন্ধন

ব্যর্থ ও দুর্নীতিবাজদের ক্ষমতায় চায় না: ইসলামী আন্দোলন

ব্যর্থ ও দুর্নীতিবাজদের ক্ষমতায় চায় না: ইসলামী আন্দোলন

কুষ্টিয়ায় প্লাইউড বোর্ড কারখানায় আগুন

কুষ্টিয়ায় প্লাইউড বোর্ড কারখানায় আগুন

চাঁদাবাজির তকমা থেকে পরিবহন সেক্টরকে বের হতে হবে : শিমুল বিশ্বাস

চাঁদাবাজির তকমা থেকে পরিবহন সেক্টরকে বের হতে হবে : শিমুল বিশ্বাস

ফরিদপুরের শ্রেষ্ঠ পুলিশ পরিদর্শক হলেন জাফর ইকবাল

ফরিদপুরের শ্রেষ্ঠ পুলিশ পরিদর্শক হলেন জাফর ইকবাল

প্রথম ম্যাচের অর্থ পুরস্কার দাবানলে ক্ষতিগ্রস্তদের দিলেন ফ্রিটজ

প্রথম ম্যাচের অর্থ পুরস্কার দাবানলে ক্ষতিগ্রস্তদের দিলেন ফ্রিটজ

শুধু ঘোষণাপত্র নয়, ১৬ বছরের আন্দোলনের স্বীকৃতি চায় ১২ দলীয় জোট

শুধু ঘোষণাপত্র নয়, ১৬ বছরের আন্দোলনের স্বীকৃতি চায় ১২ দলীয় জোট

‘আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস’ হতে হবে সংবিধানের অন্যতম মূলনীতি - খেলাফত মজলিস

‘আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস’ হতে হবে সংবিধানের অন্যতম মূলনীতি - খেলাফত মজলিস

পাহাড় কাটা মনিটরিংয়ে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার : রিজওয়ানা হাসান

পাহাড় কাটা মনিটরিংয়ে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার : রিজওয়ানা হাসান

মেট্রোরেলের শুক্রবারের সময়সূচি পরিবর্তন

মেট্রোরেলের শুক্রবারের সময়সূচি পরিবর্তন

লৌহজংয়ে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ

লৌহজংয়ে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ

নবাব সলিমুল্লাহ অসংখ্য নেতা তৈরির মৌলিকক্ষেত্র  সৃষ্টি করেছেন : বাংলাদেশ মুসলিম লীগ

নবাব সলিমুল্লাহ অসংখ্য নেতা তৈরির মৌলিকক্ষেত্র সৃষ্টি করেছেন : বাংলাদেশ মুসলিম লীগ

আগামী সপ্তাহে সুইজারল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

আগামী সপ্তাহে সুইজারল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

নালিতাবাড়ীতে মোবাইল কোর্টে ৭ ব্যক্তির কারাদন্ড

নালিতাবাড়ীতে মোবাইল কোর্টে ৭ ব্যক্তির কারাদন্ড